বাংলাদেশ-নেপাল ফুটবল সম্পর্ক দীর্ঘদিনের : বিরাট জংসাই

চারদিন আগে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম থেকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নেপাল জাতীয় নারী দলকে হারিয়ে বাংলাদেশীদের এমন সফলতা গোটা নেপাল জুড়ে আলোচিত হয়েছে। দেশটির এক নম্বর খেলা হচ্ছে ফুটবল। যে কারণে ফুটবলের আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় ম্যচগুলোতে দর্শকে ঠাসা থাকে গোটা স্টেডিয়াম।

ব্যতিক্রম ছিলনা গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বনাম নেপাল জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যকার ফাইনালে। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দশরথ রঙ্গশালা। এখানেই শেষ নয় বিপুল সংখ্যক ফুটবল অনুরাগীকে দেখা যায় স্টেডিয়ামের চতুর্দিকে ঘুর ঘুর করতে। স্টেডিয়ামে প্রবেশের সুযোগ খুঁজছিল তারা। স্বাগতিক দর্শকদের এমন বাঁধভাঙ্গা সমর্থনের বিপরীতে গিয়ে সাবিনারা যে দুপুটে খেলা উপহার দিয়েছে তা দীর্ঘদিন মনে রাখবে নেপালী সমর্থকরা।

এদিকে নারী দল নেপাল জয় করে ফিরতে না ফিরতেই ফের নেপালে বাংলাদেশের ফুটবল। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর স্বাগতিক নেপাল জাতীয় দলের সঙ্গে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় দল। বর্তমানে কম্বোডিয়া সফররত বাংলাদেশ দলটি ইতোমধ্যেই নেপালে পৌঁছেছে। গতকাল কম্বোডিয়ায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের এই ফুটবলিং সম্পর্ক একদিনে গড়ে উঠেনি। দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে সফর বিনিময়। বিষয়টি স্বীকার করেছেন নেপাল জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এবং অল নেপাল ফুটবল এসোসিয়েশনের (আনফা) সহসভাপতি বিরাট জাংশাই। বার্তা সংস্থা বাসসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল ফুটবলের সম্পর্ক ৫ বা দশ বছরের নয়। আমি যখন ফুটবল খেলতাম তখন আমাদের প্রতিপক্ষ ছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফুটবলার, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান সভাপতি সালাহউদ্দিন (কাজী সালাহ উদ্দিন) এবং প্রয়াত বাদল রায়। ওই সময় কৃষ্ণ থাপা ও জিবন লামাও আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছে। আমরাও বাংলাদেশে গিয়ে খেলেছি।

যতটুকু মনে পড়ে ১৯৮৫ সালে আমি বাংলাদেশে ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলেছি। ওই সুবাদে বাংলাদেশের অনেক ফুটবল খেলোয়াড়ের সঙ্গে রয়েছে আমাদের ঘনিষ্ঠতা। এখনো পর্যন্ত সেই বন্ধন অটুট আছে।’ ওই সময়ের সেই কিংবদন্তি ফুটবলাররাই এখন দুই দেশের ফুটবলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে বিরাট জংসাই বলেন,‘এখন আমি আনফার সহসভাপতি এবং সালাউদ্দিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি। তিনি অবশ্য আমার সিনিয়র। এখনো আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান আছে। যে কারণে নেপালের জাতীয় দলের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় দলের মধ্যে প্রচুর ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

তিনি বলেন,‘দুই দেশ এ পর্যন্ত ২৩টি ম্যাচ খেলেছে। তন্মধ্যে আমরা ৭টিতে জয়লাভ করেছি। আর বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ১৩টি ম্যাচে। ফিফা প্রীতি ম্যাচে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ফের পরস্পরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি আমরা। ভাল বন্ধুত্বের নিদের্শন হিসেবেই এই ম্যাচের আয়োজন। অবশ্য এই ম্যাচের মাধ্যমে দুই দেশই চায় নিজেদের র‌্যাংকিংকে এগিয়ে নিতে। যে কারণে প্রায় দুইমাস ধরে আমাদের জাতীয় দলের অনুশীলন চলছে। অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ম্যাচের পর লাওস ও কম্বোডিয়ার বিপক্ষেও প্রীতি ম্যাচ খেলব আমরা।’

বন্ধুত্ব থাকলেও ময়দানি লড়াইয়ে বাংলাদেশকে কোন ছাড় দিতে রাজি নয় নেপালীরা। যার প্রতিফলন ঘটেছে আনফার এই কর্মকর্তার মন্তব্যেও। তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচে আমরা জয়লাভ করতে চাই। এতে আমাদের র‌্যাংকিংয়েরও উন্নতি ঘটবে।

আমাদের দলে এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছেন অধিনায়ক গোলরক্ষক কিরন চন্দ্র, অ্যাটাকিং ডিফেন্ডার রোহিত সান, বিমল, অঞ্জনসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় । দলে নতুন দুইজন খেলোয়াড় রয়েছে যারা সম্প্রতি জাতীয় দলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচেও গ্যালারী পরিপূর্ণ থাকবে বলে আশা করছেন জংসাই। তার ভাষ্যমতে ফুটবল হচ্ছে এই মুহূর্তে নেপালের এক নম্বর গেম। ইতোমধ্যে প্রীতি ম্যাচের টিকিটের মুল্যও নির্ধারণ হয়ে গেছে। ভিআইপি এক হাজার টাকা এবং গ্যালারি পাঁচশত টাকা। শুরু হয়ে গেছে টিকিট বিক্রিও।

Rent for add

সর্বশেষ নিউজ

for rent